মালিকদের সদিচ্ছার অভাবে গণপরিবহনে বিশৃঙ্খলা।




রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে ‘বাস রুট রেশনালাইজেশন’ বা ‘বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজি’ চালুর উদ্যোগ বারবার ব্যর্থ হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাস মালিকদের রাজনৈতিক প্রভাব ও সদিচ্ছার অভাবই এর মূল কারণ। গত ১৫ বছর ধরে পরিবহন খাত নিয়ন্ত্রণকারী মালিকদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা থাকায় এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় এই প্রকল্প সফল হবে বলে আশাবাদী ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)।

বাস রুট রেশনালাইজেশনের ইতিহাস
২০০৪ সালে প্রথম ‘বাস রুট রেশনালাইজেশন’ পরিকল্পনা প্রস্তাব করা হয়। ২০১৬ সালে ঢাকাকে ৫টি রুটে ভাগ করে ৫ রঙের বাস চালানোর পরিকল্পনা করা হয়, কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি। ২০২১ সালে পরীক্ষামূলকভাবে ৫০টি বাস নিয়ে ৩টি রুটে ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ চালু করা হয়, কিন্তু মালিকদের রাজনৈতিক প্রভাবে তা ব্যর্থ হয়।

বর্তমান উদ্যোগ ও আশাবাদ
ডিটিসিএ এখন আবারও এই প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা চালাচ্ছে। রাজধানীর ৩৮৮ রুটকে সমন্বয় করে ৪২টি রুটে বাস চলাচলের পরিকল্পনা করা হয়েছে। আগামী মার্চ মাস থেকে নগর পরিবহন বাস চালু করার লক্ষ্য রয়েছে। ডিজিটাল টিকিটিং ও ক্যামেরা সংযুক্ত বাস চালু করা হবে, যাতে যাত্রীরা নিরাপদ ও সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল করতে পারেন।

মালিক সমিতির দ্বিধা
ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতি এখনো এই প্রকল্প নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে। তারা ডিটিসিএর পরিকল্পনার শর্তাবলি ও সুবিধা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পায়নি। তবে মালিক সমিতি নিজেদের উদ্যোগে টিকিট কাউন্টারের মাধ্যমে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রুটে বাস চালানোর পরিকল্পনা করছে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
স্কুল ও অফিসগামী যাত্রীদের জন্য শাটল বাস সার্ভিস চালুর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে জরিপ চলছে। পাশাপাশি, বাস ও লেগুনার রুটগুলোর ম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। ডিটিসিএ আশা করছে, এই উদ্যোগের মাধ্যমে রাজধানীর গণপরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।